সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন
মুলাদী প্রতিনিধি॥সরকারি মুলাদী মাহমুদজান মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০১৮ সালে সরকারি বিদ্যালয় হিসাবে তালিকাভুক্ত করা একটি বহুল পরিচিত সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারিভাবে পরিচয় লাভ করার পর থেকেই যেন একের পর এক বেরিয়ে আসছে অনিয়ম ও দুর্নীতি। বর্তমানে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে কোমলমতি গরীব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর জানিয়েছে, স্যার বলেছেন কোচিং করতেই হবে নইলে পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হবে। যদি কোচিং না করি তাহলেও ৫০০ টাকা করে প্রতিমাসে দিতেই হবে।
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাবা নাই মা অন্য জায়গায় বিয়ে করছে মা এখন আর আমাকে বেশি টাকা দিতে পারেন না। আমি কিভাবে এত টাকা দেব। আমি যদি টাকা না দেই স্যার যদি আমাকে স্কুল থেকে বের করে দেবেন আমি কি আর পড়তে পারব না।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, বাইরের শিক্ষকদের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করার চিন্তা ভাবনা করেই আমরা এই অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা চালু করেছি। ৫০০ টাকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইরের চেয়ে তুলনামূলক টাকা একদম কমই দাবি করেছি। যদি কেউ কোচিং না করতে চায় তবে কাউকে জোর করা হবে না।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ব্যাপারটা পুরোই বিপরীত। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কোচিং করুক অথবা নাই করুক ৫০০ টাকা করে দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক আদেশ করেছেন বলে দাবি একাধিক শিক্ষার্থীর। সরকারি আইনে পড়াশোনার মান বাড়াতে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার বিধানকে টাকা উপার্জনের জন্য অবৈধভাবে ব্যাবহার করছে এই শিক্ষক এবং তাদের স্কুলের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।
আরও জানা গেছে, যে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুলাদীর দায়িত্বশীল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন নিজেই। জাকির হোসেনকে তার মুঠোফোন যোগাযোগ করে এই কোচিং বাণিজ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ঘটনার সত্যতা মিললে জড়িতদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সমস্ত অসাধু শিক্ষকদের কারণেই গরীব শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার মন তৈরি হওয়ার আগেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোমলমতি গরিব শিশুদের ভবিষ্যত রক্ষার্থে এই সকল অসাধু শিক্ষকদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভভাবকরা।
Leave a Reply